কাবা ঘরের ক্রমবিকাশ

কাবা ঘরের ক্রমবিকাশ – পৃথিবীর প্রাচীনতম ইবাদতগৃহ কাবা ঘরের ক্রমবিকাশ কিভাবে হলো, সেটা নিয়েই আজকে আলোচনা হবে ইনশাল্লাহ।

আমাদের মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় জায়গা হিসেবে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো, বর্তমান সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত বাইতুল্লাহ।

এই বাইতুল্লাহ আমাদের সকলের নিকট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে? আল্লাহ তা’আলা এই পৃথিবীতে মানুষ পাঠানোর পূর্বে ইবাদাতের জন্য একটি ঘর তৈরি করলেন।

যাতে পৃথিবীবাসী উক্ত ঘরের দিকে মুতাওয়াজ্জু হয়ে আল্লাহর ইবাদত করতে পারে। আর এটাকেই বাইতুল্লাহ বলা হয়।

আর আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদেরকে বললেন, তোমরা এই ঘর তাওয়াফ করো। তো ফেরেশতারা সেই ঘরটি তাওয়াফ করতো।

একটা সময় হযরত আদম আ. কে আল্লাহ তা’আলা দুনিয়াতে প্রেরণ করলেন। আদম আ. কে দুনিয়াতে পাঠানোর পর একে একে আরো অনেক নবী-রাসূল প্রেরণ করলেন।

হযরত ইদরীস আ., হযরত নূহ আ.। হযরত নূহ আ. কে যখন আল্লাহ এই পৃথিবীতে পাঠালেন, তখন দেখা গেল যে, তার উম্মতের অধিকাংশই অবিশ্বাসী ছিল।

তারা আল্লাহকে মানতে চাইতো না। এর ফলে আল্লাহ তাদের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে আযাব হিসেবে মহাপ্লাবন নাজিল করলেন।

যেই আযাবের ফলে পুরো পৃথিবী পানিতে থই থই করছিল। সে সময় এই কা’বা ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

এই কাবা ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর একে একে অনেকগুলো বছর কেঁটে গেল।

ইবরাহিম আ. ও কাবা

একটা সময় আল্লাহ হযরত ইবরাহিম আ. কে দুনিয়াতে পাঠালেন। তাকে নমরুতের হাত থেকে বাঁচালেন। এটি আবার অন্য কাহিনী।

হযরত ইব্রাহিম আ. এর সন্তান হযরত ইসমাইল আ. যখন বড় হলেন তখন আল্লাহ হযরত ইবরাহিম আ. কে বললেন, তোমরা একটি ঘর তৈরি করো।

যেই ঘরটি হবে একটি নিদর্শনস্বরুপ এবং সেখানে মানুষ আমার একত্ববাদের স্বীকার করবে।

তখন আল্লাহর নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম আ. ও হযরত ইসমাইল আ. বিভিন্ন জায়গা থেকে পাথর এনে একটি ঘর তৈরি করলেন। যাকে আমরা বাইতুল্লাহ বা কাবা নামে চিনি।

এই বাইতুল্লাহ তৈরির পর আরো বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম সংস্কারমূলক কাজ হয়েছে। কুরাইশদের সময় হয়েছে। খেলাফতের সময় হয়েছে। সালতানাতের সময় হয়েছে। বিভিন্ন সময় হয়েছে।

একটি প্রশ্ন ও জবাব

তো এই কাবা ঘর নিয়ে একটি প্রশ্ন আছে নাস্তিকদের। যে, আমরা কি কাবা ঘরকে তাওয়াফ করি নাকি পূজা করি?

যেমন হিন্দুরা মূর্তিকে পূজা করে। মূলত তা নয়। মুসলমানরা কাবাকে কখনো পূজা করে না। তাহলে প্রশ্ন জাগে যে, কাবা তাহলে কি?

কাবা ঘর বা বাইতুল্লাহ হলো, আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকার করে তার নিকট নতজানু হওয়ার একটি মাধ্যম। আবার বলছি,

কাবা ঘর বা বাইতুল্লাহ হলো, আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকার করে তার নিকট নতজানু হওয়ার একটি মাধ্যম। আল্লাহ বলেছেন, এই কাজটি করো।

আমাদের তখন এই কাজটি করা বাধ্যতামূলক। কারণ, আমরা আল্লাহকে বিশ্বাস করি। যে ব্যক্তি আল্লাহকে বিশ্বাস করে না, সে হয়তো এই কাজটি করবে না।

আল্লাহ তা’আলা অবাধ্যতাকারীদের জন্য কঠিন আযাবের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আপনি আল্লাহকে বিশ্বাস করেন, তাহলে আপনি তার আদেশকে অবশ্যই মানবেন।

নাহলে পরকালে আল্লাহ তা’আলা আপনাকে বিন্দুমাত্র ছাড় দিবে না।

কারণ, জেনে একটা অন্যায় করা না জেনে অন্যায় করা থেকে হাজার গুণ বেশি ক্ষতিকারক।

তো এই কাবা ঘর কিভাবে তৈরি হলো, সেটাও আমরা জানলাম এবং এই কাবা ঘর নিয়ে আমাদের বিশ্বাস করি তাও আমরা জানলাম।

আশা করি, এটি পরিপূর্ণ স্পষ্ট করতে পেরেছি। এখন মূল কথা হলো, আপনাদের মধ্যে যারা হজ করেছেন তারা তো অবশ্যই সৌভাগ্যবান।

আর যাদের উপর হজ ফরজ হয়ে গিয়েছে, তারা অবিলম্বে হজ আদায়ের চেষ্টা করবেন।

যদি আপনি একটি হজের নিয়্যত করেন, তাহলে আপনি একটি সওয়াবের অধিকারী হবেন।

আর যখন হজটি সম্পূন্ন করবেন, তখন আরো বড় সওয়াবের অধিকারী হবেন।

আর যদি আল্লাহ আপনার হজকে কবুল করে হজ্জে মাবরুর দান করেন তাহলে তো আপনার দুনিয়া ও আখিরাত দুটোই সফল।

আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে তাওফিক দান করুন। আমীন।

Scroll to Top